নেপালে হঠাৎ করে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে দেশটিতে অভ্যুত্থানের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনীর একাংশ ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতায় রাজধানী কাঠমান্ডুতে উত্তেজনা চরমে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করে আসা তৃণমূল রাজনৈতিক শক্তিগুলোও এ অবস্থায় নতুন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, অভ্যুত্থানের পরপরই দেশজুড়ে অনিশ্চয়তার আবহ তৈরি হয়। একদিকে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে চেষ্টা করছে, অন্যদিকে সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এমন অবস্থায় এক চমকপ্রদ মোড় নেয় নেপালের রাজনীতি। এতদিন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তীব্র দ্বন্দ্বে থাকা তৃণমূল দলগুলো নিজেদের অবস্থান বদলে আলোচনার টেবিলে বসেছে। তারা জানিয়েছে, দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষার স্বার্থে সরকারকে সহযোগিতা করবে।
তৃণমূল নেতাদের ভাষ্যমতে, রাজনৈতিক শত্রুতা ও দ্বন্দ্ব ভুলে এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলাই জরুরি। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, রাষ্ট্রের স্বার্থকে ব্যক্তিগত বা দলের স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখা হবে। এতে করে নেপালের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অভ্যুত্থান পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারও দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। সেনা ও প্রশাসনের একাংশকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভারত ও চীনসহ প্রতিবেশী দেশগুলো নেপালের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আহ্বান জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তৃণমূল রাজনৈতিক শক্তির এই অবস্থান পরিবর্তন নেপালের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে চলা শত্রুতা ও সংঘাত যদি সত্যিই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দিকে যায়, তবে নেপালের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে। তবে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা এখনো অনিশ্চিত।