টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় একাধারে সফল অভিনেতা, প্রযোজক ও একজন প্রভাবশালী তারকা। তবে তার জীবনের ব্যক্তিগত অধ্যায়ও কম চর্চিত নয়। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ খোলামেলা কথা বলেন নিজের পারিবারিক জীবন নিয়ে। সেখানেই উঠে আসে তার জীবনের এমন এক তথ্য, যা শ্রোতা-দর্শককে আবেগাপ্লুত করে তোলে।
প্রসেনজিৎ বলেন, গত ২৫ বছরে তার দু’টি বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙে গেছে। তবে তিনি এখনো ব্যবহার করে যাচ্ছেন সেই একই ফোন নম্বর, যা বহু বছর আগেই নিয়েছিলেন। তিনি জানান, অনেকেই সম্পর্ক ভাঙার পর পুরোনো স্মৃতি বা যোগাযোগের পথগুলো মুছে ফেলেন, কিন্তু তিনি কখনো তা করেননি। তার ভাষায়, ‘‘আমি বিশ্বাস করি সম্পর্ক টিকুক বা না-টিকুক, যোগাযোগের পথটা খোলা রাখা দরকার। মানুষ যদি একসময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে, তাকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা যায় না।’’
এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, একজন ব্যক্তি হিসেবে প্রসেনজিৎ কতটা পরিণত ও আবেগপ্রবণ। ব্যক্তিগত জীবনে বারবার ভাঙন ও জটিলতা সত্ত্বেও তিনি নিজের মূল্যবোধ ধরে রেখেছেন। তার মতে, ফোন নম্বরটা বদলালে অনেকে ভাববেন তিনি হয়তো কাউকে এড়িয়ে যেতে চাইছেন বা পুরোনো সম্পর্কগুলো ভুলে যেতে চাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি এমনটি বিশ্বাস করেন না।
প্রসেনজিতের এই স্বীকারোক্তি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। অনেকেই মন্তব্য করেন, এইরকম দৃষ্টিভঙ্গি একজন বড় মাপের মানুষকেই মানায়। তার কথায় উঠে এসেছে সম্পর্কের প্রতি সম্মান, স্মৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা এবং একজন সাবালক মানুষের মনোভাব।
উল্লেখ্য, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম স্ত্রী ছিলেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। পরবর্তীতে তিনি অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। অর্পিতার সঙ্গে বর্তমানে তার সংসার টিকে আছে এবং তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।
একাধিক বিবাহ এবং ব্যক্তিগত টানাপোড়েন সত্ত্বেও প্রসেনজিৎ সবসময়ই পেশাগতভাবে দৃঢ় থেকেছেন। তার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় এবং টলিউডের আধুনিক রূপান্তরের পেছনে তার বড় অবদান রয়েছে। একাধারে একজন শক্তিশালী অভিনেতা এবং ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি নিজের জায়গা পোক্ত করে নিয়েছেন দর্শকের হৃদয়ে।
প্রসেনজিতের এমন অকপট স্বীকারোক্তি অনেকের মন ছুঁয়ে গেছে। অনেকেই বলছেন, সম্পর্ক যেমনই হোক, সম্মান এবং আবেগের জায়গা থেকে যদি তা দেখা যায়, তবে অনেক সমস্যারই সমাধান সম্ভব। প্রসেনজিৎ যেন সেই শিক্ষাই আবারও নতুনভাবে মনে করিয়ে দিলেন।