চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হারে আর শীর্ষে থাকতে পারেনি যশোর শিক্ষা বোর্ড। ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ পাসের হার নিয়ে এবার তারা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে ৭৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ পাসের হার নিয়ে রাজশাহী বোর্ড ছিনিয়ে নিয়েছে সেরা বোর্ডের মুকুট।
এর আগে ২০২২ সালে ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ পাসের হারে যশোর বোর্ড দেশসেরা হয়েছিল। তবে ২০২৩ সালে এ স্থান হারানোর পর চলতি বছরও তারা শীর্ষস্থান ফিরে পায়নি। এবারের ফলাফলে বোর্ডটির পাসের হার কমেছে ১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ, আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে ৫ হাজার ৩৫১ জন।
যশোর বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মোট ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৩১৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৪১০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রী ৮ হাজার ৩৭২ ও ছাত্র ৭ হাজার ৩৮ জন।
বিগত কয়েক বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যশোর বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ক্রমাগত ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে পাসের হার ছিল ৮৬.১৭ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২০ হাজার ৬১৭ জন। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল আরও বেশি—পাসের হার ছিল ৯৫.১৭ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৩০ হাজার ৮৯২ জন।
এছাড়া ২০২১ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৯৩.৯ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৬ হাজার ৪৬১ জন। করোনার আগের বছর ২০২০ সালে পাসের হার ছিল ৮৭.৩১ শতাংশ, আর ২০১৯ সালে ছিল ৯০.৮৮ শতাংশ।
২০২৫ সালের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে ভালো করেছে। এ বিভাগে ৩৯ হাজার ৮৫৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৩৬ হাজার ১৭৭ জন পাস করেছে, পাসের হার ৯০.৭৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ৩৭৯ জন, যার মধ্যে ছাত্রী ৬ হাজার ৮১৭ জন এবং ছাত্র ৬ হাজার ৫৬২ জন।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৭৯.১৭ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫৭ জন। মানবিক বিভাগে পাস করেছে ৬৪.৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ জন।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোসাম্মৎ আসমা বেগম বলেন, “পরীক্ষা হয়েছে সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে। ফলাফলে শিক্ষকদের মনিটরিং ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মতিন জানান, “জুলাই মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও আন্দোলনের প্রভাবে কিছুটা ছেদ সৃষ্টি হলেও, পরবর্তীতে সঠিকভাবে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করা হয়েছে।”