ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের স্ত্রীকে ‘পুরুষ’ হিসেবে অভিহিত, হলো মামলা

0
50

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে ‘পুরুষ’ বলে দাবি করার অভিযোগে একদল ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনাটি ফ্রান্সসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি করেছে।

২০২২ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয় যে ব্রিজিত মাখোঁ প্রকৃতপক্ষে একজন ‘জন্মগত পুরুষ’ এবং তার আসল নাম ‘জ্যাঁ-মিশেল ট্রনিয়েই’। এই ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্বের প্রেক্ষিতে ইউটিউব ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে নানা ভিডিও এবং পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ব্রিজিতের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।

ব্রিজিত মাখোঁ এই অপপ্রচারকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অপমানজনক বলে অভিহিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি আদালতে মানহানির অভিযোগে মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। মামলায় দুজন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে—তাদের একজন হলেন নাতালি ডার্টোর, যিনি প্রথমে এ বিষয়ে একটি ‘গবেষণা প্রতিবেদন’ তৈরি করেন, এবং অপরজন হলেন ইউটিউবার নেভিন কার্ডিয়াক, যিনি ভিডিওর মাধ্যমে ওই দাবি ছড়িয়ে দেন।

ব্রিজিতের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, এই প্রচারণা তার সম্মান, পারিবারিক জীবন এবং ব্যক্তিগত মর্যাদার ওপর গুরুতর আঘাত করেছে। তারা দাবি করেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে একজন বিশিষ্ট নারীকে অপমান করার উদ্দেশ্যেই এই কাজটি করা হয়েছে।

আসামিপক্ষ যদিও যুক্তি দেখিয়েছে যে এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার আওতায় পড়ে এবং তারা এটি অনুসন্ধানমূলক কাজ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন, তবে আদালত আপাতত সেই যুক্তিকে স্বীকৃতি দেয়নি। শুনানি শেষে আদালত জানায় যে মামলার রায় শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।

এমানুয়েল মাখোঁ এবং ব্রিজিত মাখোঁ এর আগেও তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে নানা গুজবের মুখে পড়েছেন, বিশেষ করে বয়সের পার্থক্য নিয়ে। তবে এই ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচারের মাত্রা ও ব্যক্তিগত আক্রমণের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ব্রিজিত মাখোঁর এই আইনি পদক্ষেপ শুধু নিজের সম্মান রক্ষার চেষ্টা নয়, বরং অনলাইনে ভুয়া তথ্য এবং ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর প্রতিবাদের অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here