দুর্নীতির অভিযোগে ইস্তাম্বুলের মেয়র গ্রেপ্তার, তুরস্কজুড়ে প্রতিবাদে উত্তাল জনতা

0
62
turkey

তুরস্কের অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক নেতা ও ইস্তাম্বুল শহরের বর্তমান মেয়র একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রথমে তাকে আটক করা হয়, পরে আদালতের আদেশে তাকে মারমারা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনাকে ঘিরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র জনরোষ ও প্রতিবাদ।

ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। টানা পাঁচদিন ধরে চলছে বিক্ষোভ, যার অগ্রভাগে রয়েছেন ইমামোগলুর স্ত্রী দিলেক কায়া ইমামোগলু। এক বিশাল জনসমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “এরদোয়ানের সময় শেষ। জনগণ এবার তার বিদায় ঘন্টা বাজাবে।” তার ভাষ্য অনুযায়ী, ইমামোগলুর গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ অন্যায় এবং এটি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের অংশ।

একরেম ইমামোগলু বরাবরই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের একজন কড়া সমালোচক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত। বিশ্লেষকদের মতে, ইমামোগলুর গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিরোধী কণ্ঠরোধের কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইমামোগলু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা তুরস্কের গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য একটি হুমকি।” তারা আরও উল্লেখ করে, “একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী রাজনীতির প্রতি শ্রদ্ধা রাখা অপরিহার্য। তুরস্ক যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, তাহলে এই নীতির প্রতি সম্মান জানাতে হবে।”

ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সারা দেশে একটি প্রতীকী ভোট আয়োজন করে বিরোধী দল সিএইচপি (রিপাবলিকান পিপলস পার্টি)। এতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ অংশ নেয় বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। তাদের দাবি, এক কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ এই প্রতীকী ভোটে ইমামোগলুর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন ইমামোগলু। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের পুনর্নির্বাচনে তিনি আবার বিজয়ী হন। কারাগার থেকে এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া এক বার্তায় তিনি লিখেছেন, “এই প্রতীকী ভোটে দেশের মানুষ সরকারের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—এবার যথেষ্ট হয়েছে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here