যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুলে সরব হয়েছেন দেশটির অর্ধশতাধিক এমপি। সম্প্রতি পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় লেবার, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি এবং অন্যান্য বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা জোর দিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রিটেনের উচিত এখনই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া।
এই দাবির পক্ষে এমপিরা যুক্তি দেন যে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া শুধু ন্যায়বিচারের বিষয় নয়, বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথকেও সুগম করতে পারে। তারা বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের দ্বন্দ্বের দীর্ঘ ইতিহাসে যুক্তরাজ্য একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে, তাই ব্রিটেনের ওপর নৈতিক দায়ও বর্তায়।
এমপি স্টিফেন টুইগ, লায়লা মোরান, রিচার্ড বার্গনসহ আরও অনেকে বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষ যুগের পর যুগ ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে এবং তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির অভাব বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুতর অসমতা সৃষ্টি করেছে। এই অবস্থায়, ব্রিটেনের উচিত দ্বৈত রাষ্ট্র সমাধানকে ভিত্তি ধরে নিরপেক্ষ ও সাহসী অবস্থান নেওয়া।
এছাড়া আলোচনায় উঠে আসে গাজা উপত্যকায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়টিও। এমপিরা বলেন, শিশু ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর যে ধরনের হামলা চলছে, তা শুধু মানবিক নয়, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীও অগ্রহণযোগ্য। এই পরিস্থিতিতে নিরবতা নয়, কার্যকর কূটনৈতিক ও নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
ব্রিটেন সরকার এখনো ফিলিস্তিনকে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। যদিও ২০১৪ সালে হাউস অব কমন্সে এক প্রতীকী ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে রায় দেন, সেটি কার্যকর নীতিগত অবস্থান হিসেবে প্রতিফলিত হয়নি।
বর্তমান এই আহ্বান নতুন করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে ব্রিটেনের ভূমিকাকে সামনে নিয়ে এসেছে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনার ঝড় তুলেছে। দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ নৈতিক দাবির মুখে এবার ব্রিটিশ সরকারের সামনে একটি বড় কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা এসে দাঁড়িয়েছে।