ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধ ও একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্পষ্ট শর্তের ভিত্তিতে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল সৌদি আরব। আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত এই উদ্যোগটি এখনো চূড়ান্ত রূপ নেয়নি, তবে এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
সৌদি পররাষ্ট্র নীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে যে কৌশলগত পরিবর্তন এসেছে, তারই অংশ হিসেবে দেশটি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে রিয়াদ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত না করে এবং গাজা-জেরুজালেমে চলমান দমন-পীড়ন বন্ধ না করলে কোনো সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব নয়।
এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে। ওয়াশিংটনের চাপে একাধিকবার সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ যোগাযোগ হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযান ও গাজায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ার প্রেক্ষাপটে আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়।
সৌদি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট—ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলে এবং পূর্ব জেরুজালেম রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে তবেই তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বিবেচনা করবে। এই প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি, দখলকৃত ভূমি থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং আরব শান্তি পরিকল্পনার পূর্ণ বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি আরবের এই কৌশলগত অবস্থান শুধু একটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক নীতি নয়, বরং এটি সমগ্র মুসলিম বিশ্বের আবেগ ও ন্যায্যতার প্রতিফলন। যুদ্ধ ও সহিংসতা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ তৈরি না হলে এ ধরনের সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব নয় বলেও তারা মত দেন।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্কের আলোচনা অনেকটাই অনিশ্চয়তায় ঠেকেছে। তবে রিয়াদের দৃঢ় অবস্থান আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাধানের বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা।