বাংলাদেশের তিনটি বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা দেখা দেবে, যা দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি করতে পারে। আবহাওয়াবিদদের মতে, এই সময়ের মধ্যে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহের অনেক স্থানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮৯ মিলিমিটার বা তারও বেশি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রবিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণও হতে পারে। পরবর্তী তিন দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অধিদপ্তরের বিশেষ সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে এই নদীগুলোর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে, যার ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি জমে যেতে পারে। একইভাবে ময়মনসিংহ বিভাগের সোমেশ্বরী, ভোগাই ও কংস নদীর পানিও বৃদ্ধি পেতে পারে। এ অবস্থায় নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ু বর্তমানে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বেশ সক্রিয় রয়েছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরেও তা শক্তিশালী অবস্থায় আছে। এই কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বজ্রপাতের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে এবং নিচু জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। কৃষিজমিতে অতিরিক্ত পানি জমে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে নৌ চলাচলেও বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য কোনো সতর্ক সংকেত না থাকলেও মাঝারি ও ছোট নৌযানগুলোকে নদ-নদী ও সাগর মোহনায় সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষদের আগামী কয়েকদিন বিশেষভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বন্যা বা আকস্মিক জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি রাখছে। আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর মৌসুমি বায়ু ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও কমে যাবে।